Hot!

Other News

More news for your entertainment

অর্থহীন



দীর্ঘপ্রায় ১ যুগ পরে আজ এক লৌহ-মানবীর সাথে দেখা। তার জীর্ণ-শীর্ণ মূখবয় দেখে সবকিছু যেন “অর্থহীন” মনে হলো। অধিকায় সেই মূখখানা এমন প্রকৃতির হয়েছে-চেনা বড় দায়। চোখ দুটো জীবিত, আমার দিকে ফ্যালফ্যল করে তাকিয়ে আছে বিরামহীন-প্রশ্নজর্জরিত।



খানিক পরে জীর্ণ মূখেই অষ্পষ্ট স্বরে বলল; “কে-ম-ন.....আছ?”
উত্তর দিলাম: “সাধরণ”।



পাশেই লুবনা আপা। জীর্ণ তার মূখখানাও, যেন ভাবনার অন্ত নেই। দুটো বাচ্চা আইপ্যাড নিয়ে ব্যস্ত।
কত পরিবর্তন??????????
লুবনা আপা????? এখন দু’বাচ্চার গর্বিত মা!!!!!!!!!!!


বাবু ভাইয়া স্পেনে আজ ১১ বছর হলো। আমার সাথে যোগাযোগ আছে। নানান প্রয়োজনে আমি এখনো তার সঙ্গী। সকালে ফেইসবুকে ম্যাসেজ দিল ল্যাব এইডে যাবি.....দেখে আসবি।



কি মহানুভবতা বাবু ভাইয়ার!!!!! অবাক হইনা। কারণ তিনি সর্বদা যেমন ছিলেন এখনো তেমনি আছেন, বদলাননি। শুধু বদলেছে, লুবনা আপা আর তার লৌহ-মানবী “মা” যিনি ল্যাব এইডের বিছানায় শুয়ে পরপারের কথা হয়তো ভাবছেন..........হয়তো বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছেন.....।


একদা আমি বাবু ভাইয়ার আর লুবনা আপার পিয়ন ছিলাম। পত্র-উপহার প্রায় সবকিছুরই পিয়ন। লুবনার আপার মা’কে আমি চাচী ডাকতাম। এক পর্যায়ে লুবনা আপাদের বাসায় আমার আসা-যা্ওয়ার উপর ১৪৪ ধারা জারি করেন চাচী। চাচী বলতেন, সব নষ্টের মূল নাকি আমি। একটা বেকার (বাবু) ছেলের সাথে তার মেয়ের সকল অঘটনের দায় নাকি আমারই নিতে হবে!!!!!! সর্বশেষ দু’চার জন আত্মীয় স্বজনের সামনে আমাকে ১০ বার কানে ধরিয়ে ঐ বাসা থেকে চির বিদায় দিলেন সেই সময়কার লৌ-মানবী যিনি আজকে ফ্যালফ্যাল করে আমার পাণে চেয়ে আছেন... কিন্তু কিছুই বলতে পারছেন না।


বাবু ভাইয়ার অপরাধ....."তিনি বেকার...মাস্টার্স করেছে তো কি হয়েছে? চাকরী নেই...গাড়ী নেই...বাড়ী নেই.......আর অপবাদ ছিল....."লুবনা আপাকে বাবু ভাইয়া ব্ল্যাকমেইল করছে শুধুমাত্র তাদের অগাত সম্পত্তির লোভে"।.....কিন্তু আমি জানি, কতটা ভালবাসতেন বাবু ভাইয়া লুবনা আপকে...আর কতটা ভালবাসতেন লুবনা আপা বাবু ভাইয়াকে.....এমন গল্প কোন দিন নাট্যরূপে হবেনা......কোনদিন দ্বিতীয় উদাহরণ সৃষ্টি হবেনা।


আমার কান ধরার দিনই ছিল তাদের ভালবাসার শেষ দিন। সেদিন বাবু ভাইয়া তার প্রাণের প্রিয়তমাকে তুলে দিলেন আজকের বিছানায় শয্যাশায়ী লৌহ-মানবীর হাতে। সেটাই শেষ বিদায়......সেটাই শেষ।


ঐদিন, ২/৪ লোকজন ছিল...এরমধ্যে বাবু ভাইয়ার বড় ভাই রাজা ভাই, আমি, লুবনা আপার এক মেজর মামা এবং একজন ইমাম। লুবনা আপার মা দরবারে একহস্তে পবিত্র কোরআন শরিফ অন্যহস্তে বিষের কৌটা নিয়ে হাজির হলেন। শর্ত একটাই, বাবু ভাইয়ার সাথে লুবনা আপার এখনি বিয়ে হবে, তবে লুবনা আপাকে যেতে হবে তার লাশের উপর দিয়ে।







বাবু ভাইয়া আর সহ্য করতে পারেননি। পানি শূন্য রক্তচোখে নিজেকে সামলে নিলেন....আপাকে বললেন... “যে মা তোমাকে গর্ভে ধারন করেছে তাকে তুমি অপমান-অবিশ্বাস করতে পারোনা, তুমি তার.....”


কিশোর বয়সে গোল্লাছুট মাঝে যার সাথে পথচলা-হাত ধরা, স্বপ্ন দেখা...সেই স্বপ্নের শেষ বিদায়, চলে আসা। তারপর বাবু ভাইয়া স্পেন চলে গেলেন। শুনেছি, লুবনা আপার মা’ নাকি এক বিরাট-আচ্ছা সম্পদশালীর নিকট লুবনা আপাকে পাত্রস্থ করেছেন। আর শুনেছি, লুবনা আপার একমাত্র ছোট ভাই রাজিব নাকি অষ্ট্রেলিয়া আছেন, এক বিদেশিনীকে বিয়ে করে ওখানেই মগ্ন।



এখন, বিছানার পাশে লুবনা আপা এবং তার দু’বাচ্চা।

খানিক পরেই এক বৃদ্ধের আগমন ঘটল। বাচ্চা দুটো উঠে গিয়ে “আব্বু আব্বু” বলে কিসের যেন একটা বায়না ধরল।



এতক্ষণে বুঝলাম, সেই লুবনা আপা কেন এতো বুড়িয়ে গেলেন????? বয়সে প্রায় ২০ বছরের বড় এই লোকটির চেহারায় রক্তশূন্যতা প্রকট। যেকোন মহূর্তে তাকেও শয্যাশায়ী করতে হতে পারে।

আমার কাছে সবকিছু “অর্থহীন” মনে হলো..........................

মানুষ নিজের সুখের-সন্তানের সুখের জন্য কত কিছুই না করে??? লুবনা আপার লৌ-মানবী “মা” তার প্রকৃষ্ট উদাহরন। নিজ মেয়ের সুখের জন্য তিনি যা করেছেন তা সমাজে বিরল নয়।


উঠে দাঁড়ালাম প্রস্থানের আশায়।
দরজা পর্যন্ত এলেন লুবনা আপা.....নিচু গলায়..লুকানো চোখে....বললেন....“কেমন আছে সে.....??”


উত্তর দিলাম, “অতি সাধারণ”।

(বাবু ভাইয়া আজ অবদি বিয়ে করেননি, নিজের কামানে টাকা বৃদ্ধাশ্রম আর এতিম খানায় পাঠিয়ে দেন, স্পেনে তার বিশাল অবস্থা, দুটো রেষ্টুরেন্টসহ নানান ব্যবসা....কিন্তু অতি সাধারণ.............এবং অর্থহীন নন।)

নীলা'র "নয়ন"



২০০৪।  সবে কিশোর থেকে যুবকের প্রথম প্রহর চলছে, ভাবটা রোমান্টিকতার অপূর্ব মিশ্রন এবং বৈচিত্র্যময়। সে'সময়ই নীলা'র দেখা!

পাশাপাশি বসে যাচ্ছিলাম। আমার গন্তব্য গাজীপুর, তার'টা জানা নেই। 
বাক্য বিনিময়ে সাহসী ছিলাম না, কারণ, অাড় চোখে যতবার তার পাণে চেয়েছি ততবারই তার অগ্নি "নয়নে" দগ্ধ হয়ে লজ্জিত অথবা ভীতু হয়েছি। এভাবে আধঘন্টা, তারপর সে উধাও, এবং আমিও!

"আমার ঠিকানা আগারগাঁঁওয়ের পঙ্গু কারখানায়, নীলার'টা জানা নেই। সেদিন নীলা ছিলেন আমার পাশের সীটের সহযাত্রী। 

ঐ দিনের পর প্রায় বছর পরে, এক গ্রীষ্মে ল্যাব এইডে চাদর মোড়া নীলাকে দেখে চমকে উঠি, সেই আড় চোখাচোখি, কিন্তু লজ্জিত বা ভীতু হবার কোন লক্ষণ আমার মাঝে সেদিন ছিল না। কারণ,  তার "নয়ন যুগল" অগ্নি মূর্তি অবয়বে নয়, অনেকটাই যেন নিরুদ্দেশ-হতাশ।

অভয়ে কাছে গিয়ে জানতে চাইলাম, "আপনি সেদিন আমার সাথেই ছিলেন..মনে পড়ে???!!!

নীলা-অপলকে তাকালেন, অস্পষ্ট  ধ্বনিতে উত্তর দিলেন "হ্যাঁ"। 

এরপর জানতে  যা চাইলাম-তার উত্তরে নীলা চাদরটি সরিয়ে দিলেন,
"এক পলক" দেখেছি শুধু,  বাকী আর পারিনি।

"তার বা' হাতটি নেই"। 

এদিনই প্রথম জানতে পারি তার নাম "নীলা"

এই  নীলাকে নিয়ে আমার একটি লেখা "নীলা'র নয়ন" একটি দৈনিকে, একটি সাপ্তাহিকে প্রকাশিত হয়েছে এবং শ্রেষ্ঠ গল্পের পুরস্কারও জিতেছে।


গত কয়েকদিন যাবত নীলা'কে বেশ মনে পড়ছে, লঞ্চ ডুবি, রাস্তায় রাস্তায় এক্সিডেন্ট, গাড়ী পুড়ে যাওয়া, এসবের আবার সেলফি, লাইভ ভিডিও, ইত্যাদি, কত কি!!!???

কিন্তু নীলার সময় এসব ছিল না, তাই হয়তো নীলাকে নিয়ে এত দু:খবোধও কারোর ছিল না। 

আজ যা ঘটছে-প্রযুক্তির বদেৌলতে তা জানতে পারছে সকলে। 
কিন্তু নীলার জীবনেও এমন কিছু ঘটে গেল জানতে পারেনি কেউ।
তবে শেষটা হচ্ছে, "সেদিন যা হয়েছে আর এখন যা হচ্ছে, এসব সত্যিকারে কাম্য নয়"
কেন বারবার এসব হচ্ছে এবং হবে? 
লঞ্চে কেন অতিরিক্ত যাত্রী উঠবে? ফিটনেসহীন গাড়ী কেন রাস্তায় থাকবে? কেন প্রশিক্ষণ ছাড়া চালক গাড়ী চালাবে? আর কত নীলা, আর কত সেলফি?



সোমবার সকালে মাদারীপুর শিবচরের বাড়ি থেকে ঢাকার উদ্দেশে ভ্যানগাড়ি করে কাওড়াকান্দি লঞ্চঘাটে এসেছিলেন তিন বোন। পথিমধ্যে তারা একটি সেলফি তোলেন। পরে তাদেরই একজন সোমবার সকাল ৯টা ৩৬ মিনিটে নিজের ফেসবুক পেজে হাস্যোজ্জ্বল তিন বোনের একটি ছবি আপলোড করেন। ছবিটির ক্যাপশন ছিল ‘অন দ্য ওয়ে সিস্টার জার্নি’। তাদের আনন্দযাত্রাকে বিষাদে ডুবিয়ে এ সেলফিই হয়ে থাকলো তাদের জীবনের শেষ স্মৃতি, যেটা পাওয়া গেছে মাওয়ার লঞ্চ দুর্ঘটনায় এখনও নিখোঁজ জান্নাতুন নাঈম লাকীর ফেসবুক পেজে।

আসলেও তিন বোনের এ যাত্রা ছিল অন্যরকম! উদ্দেশ্যটাই যেন তিন বোনের হারিয়ে যাওয়া। কে জানতো প্রমত্তা পদ্মায় মরণেও তিন বোন একই সঙ্গে যাত্রা করবে! তখনও তারা জানতেন না তাদের আর ফেরা হবে না ঢাকায়, ফেরা হবে না প্রিয় ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে, পাওয়া হবে না প্রিয় বন্ধুদের সান্নিধ্য। ২৬শে আগস্ট জন্মদিন ছিল নূসরাত জাহান হীরার। জয়নুল হক শিকদার উইমেন্স মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের তার সহপাঠীদের কথা দিয়েছিলেন, ঈদের ছুটি কাটিয়ে যথাসময়ে ফিরে আসবেন তাদের মাঝে। বড় হওয়ার পরে সচরাচর জন্মদিন পালন হয়নি তার।

জমির খতিয়ানের ভুল সংশোধন করবেন কিভাবে?

লেখক: এডভোকেট জয়নাল আবেদীন চৌধুরী (রিগ্যান)
01711 970 318 | advocateregan@gmail.com | www.advocateregan.com | Facebook |


লেখাটি স্বত্ব সংরক্ষিত, অন্যত্র কপি/নকল বারিত।
তবে স্বত্ব উল্লেখপূর্বক হুবহু প্রিন্ট অথবা শেয়ার করতে বাধা নেই।


দরুন, আপনি জমির মূল মালিক এবং দখলদার। কিন্তু ভূমি খতিয়ানে আপানার মালিকীয় এবং দখলীয় জমির

মালিকানা লিপিবদ্ধ হয়েছে অন্যের নামে। অথবা খতিয়ানে রয়েছে করণিক ভুল, তখন আপনি কি করবেন?

উত্তর: আপনি যদি সত্যিকারে জমির মালিল এবং দখলকার হন তবে প্রথমে আপনাকে যেতে হবে উপজেলা ভূমি অফিসে। সেখানে নির্ধারিত ফরমে ৫ টাকার কোর্ট ফি সংযুক্ত করে ভুল সংশোধেনের জন্য আবেদন করতে হবে।


আপনার আবেদন প্রাপ্তির পর উপজেলা ভুুমি অফিস দখল এবং রেকর্ড সংক্রান্ত প্রতিবেদনের জন্য আপনার এলাকার স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি অফিসে আবেদনটি প্রেরণ করবে, তাই উপজেলা ভুমি অফিসে আবেদন দাখিলের সময় ফটোকপি সংগ্রহে রেখে স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখবেন।

ইউনিয়ন ভূমি অফিসে থেকে প্রতিবেদন পাঠানোর পর যার নামে খতিয়ানে ভুল নাম এসেছে বা সংশ্লিষ্ট পক্ষকে নোটিশ প্রদান করা হয়। তারপর একটি নির্ধারিত তারিথে উভয় পক্ষের শুনানি গ্রহণ ও দাখিলিয় গজপত্রাদি বিবেচনায় কোন আপত্তি না থাকলে খতিয়ানের করণিক ভুল সংশোধনের আদেশ দেয়া হয়।


সংশোধিত আদেশ অনুসারে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সংশোধিত খতিয়ান প্রস্তুত করে পেশ করেন এবং কানুনগো প্রয়োজনীয় রেকর্ড সংশোধন করেন।


সংশোধনের পুরো পক্রিয়া সম্পন্ন হতে সাধারনত সময় লাগে ৩০-৩৫ দিন। সরকারিভাবে সংশোধনের জন্য আবেদনের সাথে ৫/- টাকার কোর্ট ফি সংযুক্ত করতে হয়।



আবেদনের সাথে যেসকল কাগজপত্র জাম দিতে হবে:

১। সর্বশেষ নামজারি, সিএস, আর.এস, এসএ, বিএস, খতিয়ানের সত্যায়িত ফটোকপি/ সার্টিফাইড কপি
২। সংশ্লিষ্ট মৌজার এসএ ও বিএস মৌজা ম্যাপ
৩। ওয়ারিশ সনদপত্র ((প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) [অনধিক ০৩ মাসের মধ্যে ইস্যুকৃত]
৪। মূল দলিলের ফটোকপি/ সার্টিফাইড কপি( প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
৫। সর্বশেষ জরিপের পর থেকে ভায়া/পিট দলিল(প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
৬। ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের দাখিলা পত্র
৭। আদালতের রায়/আদেশ/ডিক্রির সার্টিফাইড কপি
৮। আদালতের রায়/আদেশ/ডিক্রি থাকলে আরজির সার্টিফাইড কপি
৯। বিএস জরিপের মাঠপর্চা, ডিপি খতিয়ান ইত্যাদি

জেনে নিন “নামজারির” বিভিন্ন ধাপ


নামজারি” কাকে বলে?
ক্রয়সূত্রে/উত্তরাধিকার সূত্রে অথবা যেকোন সূত্রে জমির নতুন মালিক হলে নতুন মালিকের নাম সরকারি খতিয়ানভুক্ত করার প্রক্রিয়াকে নামজারী বলা হয়। কিন্তু নিজ নাম খতিয়ানভূক্ত করার পক্রিয়াটি পদ্ধতিগত। পদ্ধতি জানা না থাকলে আপনি জমির দখলকার বা মালিক হওয়া স্বত্বে সরকারি রেকর্ডে আপনার নাম নেই। ফলে সৃষ্টি ভূমি বিরোধ এবং মামলা-হামলা সহ নানান জটিলতা। তাই, আপনার জমির নামজারি খতিয়ান করে নিন সর্বাগ্রে।
নিম্মে নামজারির সহজ পদ্ধতি ছক আকারে দেওয়া হল;


জেনে নিন: সম্পত্তি দান করার আইন-কানুন


দানকে মুসলিম আইনে হেবা বলা হয়। কারো নিকট হতে প্রতিদান ব্যতীত অর্থাৎ বিনিময় ছাড়া কোন কিছু গ্রহণ করাই হলো দান। সম্পত্তি হস্তান্তর আইন ১৮৮২ (টিপি এ্যাক্ট) এর ১২২ ধারা অনুসারে সম্পত্তি দাতা কোন ব্যক্তিকে তাৎক্ষণিকভাবে কোন সম্পত্তি হস্তান্তর করলে এবং গ্রহীতা বা গ্রহীতার পক্ষে কোন ব্যক্তি ঐ সম্পত্তি গ্রহণ করলে তাকে দান বলা হয়। তবে দান বৈধ হতে হলে ৩টি শর্ত পূরণ করতে হয় –

(১) দাতা কর্তৃক দানের (ইজাব) ঘোষণা প্রদান।
(২) গ্রহীতা তার পক্ষ হতে দান গ্রহণ করা বা স্বীকার করা।
(৩) দাতা কর্তৃক গ্রহীতাকে দানকৃত সম্পত্তির দখল প্রদান।

এছাড়া উক্ত দানের মধ্যে নিম্নোক্ত উপাদানসমূহ থাকতে হবে।

*দাতাকে সুস্থ মস্তিষ্কের সাবালক ব্যক্তি হতে হবে।
*দাতার জীবনকালের মধ্যে দান কার্য সম্পন্ন হতে হবে।
*দান গ্রহণের পূর্বে দাতার মৃত্যু হলে দান বাতিল বলে গণ্য হবে।
*দানের সময় সম্পত্তিতে দাতার মালিকানা ও দখল থাকতে হবে।
*দান স্বেচ্ছায় এবং পণবিহীন হতে হবে।
*দান গ্রহীতা মানসিক ভারসাম্যহীন বা নাবালক হরে তার পক্ষে অভিভাবক দান গ্রহণ করতে পারবেন। দান যে কেউ গ্রহণ করতে পারেন।
*মুসলিম আইন অনুযায়ী দাতা তার সমুদয় সম্পত্তি যে কাউকে দান করতে পারেন। দায়ভাগ মতে একজন হিন্দু যাদের *ভরণপোষণে আইনত বাধ্য তাদের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা রাখার পর বাকী সম্পত্তি দান করতে পারেন।
*দখল হস্তান্তরের পূর্বে দান প্রত্যাহার করা যায়। দখল হস্তান্তরের পরে দান প্রত্যাহারের জন্য আদালতের ডিক্রি লাগবে।
*দানকারী ঋণের দায় এড়ানোর বা অন্য কোন অসৎ উদ্দেশ্যে প্রতারণামূলকভাবে দান করলে, পাওনাদারের আবেদনে ঐ দান বাতিলযোগ্য হতে পারে।
*মৃত্যুশয্যাকালীন দান উইলের ন্যায় কার্যকরী হবে অর্থাৎ ঐ দান অনাত্মীয়ের অনুকূলে করা যাবে কিন্তু মোট *সম্পত্তির ১/৩ ভাগের বেশী দান করা যাবে না। তবে উত্তরাধিকারীগণের সম্মতি থাকলে অনাত্মীয়কে ১/৩ ভাগের *অধিক সম্পত্তি দান করা যাবে। এ অবস্থায় কোন উত্তরাধিকারীকে দান করা যাবে না।
*রেজিস্ট্রেশন (সংশোধন) আইন ২০০৪ এর ৭৮এ ধারা এবং সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ১২৩ ধারা অনুযায়ী দান লিখিত ও রেজিস্ট্রিকৃত হতে হবে।
*অজাত ব্যক্তি বরাবরে দান করলে দানের তারিখ হতে ৬ মাসের মধ্যে সে জন্ম গ্রহণ কররে সে দান বৈধ হবে।


রেজিস্ট্রেশন এর নিয়ম:
উক্ত সম্পত্তি দানকৃত হলেও রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক। রেজিস্ট্রেশন (সংশোধন) আইন ২০০৪ এ নতুন সংযোজিত ৭৮এ ধারা অনুসারে স্থাবর সম্পত্তির দানপত্র দলিল অবশ্যই রেজিস্ট্রি করতে হয়। দান দলিল রেজিস্ট্রেশন ফি নিম্নরূপ:

স্বামী-স্ত্রী, পিতা-মাতা-সন্তান, দাদা-দাদী ও নাতি-নাতনী, সহোদর ভাই-ভাই, সহোদর বো-বোন এবং সহোদর ভাই ও সহোদর বোনের মধ্যে যে কোনো স্থাবর সম্পত্তির দানপত্র দলিল রেজিস্ট্রি ফি ১০০ টাকা
উল্লিখিত সম্পর্কের বাইরের ব্যক্তিবর্গের মধ্যে সম্পাদিত দানপত্র দলিল রেজিস্ট্রির ফি হবে কবলা দলিল রেজিস্ট্রির জন্য প্রযোজ্য ফি’র অনুরূপ।


জীবন স্বত্ত্বে দান দলিল রেজিস্ট্রেশন ফি:
স্ট্যাম্প এ্যাক্ট ১৯০৮ এর ৫৮ নং আর্টিক্যাল অনুসারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান (মুসলিম ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান) এর জন্য জীবন স্বত্ত্বে দানের বিধান হলো – যে প্রতিষ্ঠানের নামে সম্পত্তি দান করা হবে সে প্রতিষ্ঠান ঐ সম্পত্তি শুধু ভোগ-দখল করতে পারবে, সম্পত্তি কোনরূপ হস্তান্তর করতে পারবে না। এরূপ জমির ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করতে হবে দানকারীর নামে। কোন কারণে ঐ প্রতিষ্ঠানটি কার্যকর না থাকলে সম্পত্তি দানকারীর মালিকানায় চলে যাবে এবং দান দলিল স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে।

স্ট্যাম্প ফি ২%
রেজিস্ট্রেশন ফি ২.৫%
ই ফিস প্রযোজ্য



হেবা-বিল এওয়াজ:
মুসলিম আইন অনুসারে কোন কিছু বিনিময় নিয়ে দান করাকে বলে এওয়াজ বা হেবাবিল-এওয়াজ। সম্পত্তি হস্তান্তর আইন ১৮৮২ এর ১১৮ ধারা অনুসারে দু’জন ব্যক্তি যে ক্ষেত্রে পরস্পর নিজেদের মালিকানাধীন কোন জিনিসের মালিকানা হস্তান্তর করে সেক্ষেত্রে কোন একটি জিনিস টাকা না হলে সে আদান-প্রদানকে বলে এওয়াজ বা বিনিময়। এতে বিক্রয় চুক্তির উপাদান বিদ্যমান থাকায় এটি মূলত এক ধরনের বিক্রয়। এওয়াজ দলিলে বর্ণিত সম্পত্তির একজন দাতা তার নিজের সম্পত্তি অপরজনকে দেওয়ার পর তার প্রাপ্য সম্পত্তি তিনি না পেলে তিনি তার প্রদত্ত সম্পত্তি ফেরত পাওয়ার অধিকারী হবেন। হেবা বিল এওয়াজ অগ্রক্রয়যোগ্য নয়।


হেবা-বিল-এওয়াজ এর উপাদানসমূহ:
*গ্রহীতাকে হেবা গ্রহণের বিনিময়ে দাতাকে অবশ্যই কিছু দিতে হবে।
*দানের মাধ্যমে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে নিঃস্বত্বে পরিণত করতে হবে।
*হেবা-বিল এওয়াজের ক্ষেত্রে দখল দান আবশ্যক নয়।
*হেবা-বিল-এওয়াজ প্রত্যাহারযোগ্য নয়।

জেনে নিন: ডিভোর্স-এর নিয়ম কানুন



প্রথমেই তালাক সম্পর্কে প্রচলিত ভ্রান্ত ধারনাটি শুধরে নিন। মূখে মূখে তিন বার "তালাক" শব্দটি উচ্চারণ করলে বা একসাথে "বায়েন তালাক" শব্দটি উচ্চারণ করলে তালাক বা বিবাহ বিচ্ছেদ সাথে সাথে কার্যকরী হয় না। এমনকি, মূখে উচ্চারণ ব্যতিত লিখিতভাবে তালাক দিলেও তা সাথে সাথে কার্যকরী হবে না।


১৯৭৪ সালের মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিষ্টেশন আইন অনুযায়ী এখতিয়াভূক্ত বা সংশ্লিষ্ট নিকাহ্ রেজিস্টার বা কাজীর মাধ্যমে তালাক দিতে হবে এবং তালাকের


লেখক: এডভোকেট জয়নাল আবেদীন চৌধুরী (রিগ্যান)
01711 970 318 | advocateregan@gmail.com | www.advocateregan.com |
আপনার যে কোন আইনী জিজ্ঞাসার জন্য এখানে ক্লিক করুন...


লেখাটি স্বত্ব সংরক্ষিত, অন্যত্র কপি/নকল বারিত।
তবে লেখকের স্বত্ব উল্লেখপূর্বক হুবহু প্রিন্ট অথবা শেয়ার করতে বাধা নেই।

নোটিশ স্ত্রী'কে ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পৌরসভা চেয়ারম্যান/সিটি কর্পোরেশনের চেয়ারম্যানকে পাঠাতে হবে।


মুসলিম আইন অনুযায়ী একজন পূর্ণ বয়স্ক এবং সুস্থ মস্তিস্কের স্বামী যে কোন সময় কোনরূপ কারণ ব্যতিরেকেই তার স্ত্রীকে তালাক দিতে পারেন। তালাকের ক্ষেত্রে স্বামীর ক্ষমতা একচ্ছত্র, কিন্তু এজন্য আইনের বিধান মেনেই তা করতে হবে। বিধান না মানা শস্তিযোগ্য অপরাধ।


স্বামী কর্তৃক স্ত্রী কে তালাক দেবার বিষয়ে ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের ৭ (১) ধারায় বলা হয়ে, কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে তালাক দিতে চাইলে, তিনি যে কোন পদ্ধতির তালাক ঘোষণার পর যথাশীঘ্র সম্ভব চেয়ারম্যানকে (স্থানীয় ইউনিয়ন/পৌর চেয়ারম্যান/প্রশাসক) লিখিতভাবে নোটিশ দিবেন এবং স্ত্রীকে উক্ত নোটিশের একটি অনুলিপি (নকল) প্রদান করবেন।


একই আইনের ৭ (২) ধারা অনুযায়ী, যদি কোন ব্যক্তি নোটিশ প্রদানের এই বিধান লংঘন করেন তবে তিনি এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড অথবা ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় প্রকার দণ্ডনীয় হবেন।

৭ (৪) ধারা অনুযায়ী, নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্ট পক্ষদ্বয়ের মধ্যে পুনর্মিলন ঘটানোর উদ্দেশ্যে একটি সালিশী পরিষদ গঠন করবেন এবং উক্ত সালিসী পরিষদ এই জাতীয় পুনর্মিলনের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।


৭ (৩) ধারা অনুযায়ী, চেয়ারম্যানের কাছে নোটিশ প্রদানের তারিখ হতে নব্বই দিন অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত কার্যকরী হবে না। কিন্তু, তালাক ঘোষণার সময় স্ত্রী যদি গর্ভবতী থাকে, তাহলে ৭(৫) ধারা অনুযায়ী গর্ভাবস্থা অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত তালাক বলবত হবে না।


উল্লেখ্য যে, মুসলিম পারিবারিক অধ্যাদেশ ১৯৬১ -এর ৭(১) নং ধারা অনুযায়ী স্বামী যদি চেয়ারম্যান এবং স্ত্রীকে নোটিশ প্রদান না করে তাহলে ৭ (২) ধারা অনুযায়ী স্বামী শাস্তি পাবে ঠিকই, কিন্তু তালাক বাতিল হবে না। উক্ত তালাক কার্যকর হবে। ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইনে অধ্যাদেশের কোথাও নোটিশ প্রধান না করলে তালাক হবে না এই বিধান উল্লেখ নাই। এই বিষয়ে উচ্চ আদালতের একটি সীদ্ধান্ত রয়েছে। সিভিল রিভিশন নং ৬৯৮, ১৯৯২, মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বনাম মোছা:হেলেনা বেগম ও অন্যান্য।


অন্যদিকে, সালিশী পরিষদ কতৃর্ক যদি সমঝোতা না হয় এবং নোটিশ দেবার ৯০ দিনের মধ্যে স্বামী যদি নোটিশ প্রত্যাহার না করে, তবে ৯০ দিন পরে তালাক কার্যকরী হবে। এই ৯০ দিন পর্যন্ত স্বামী তার স্ত্রী কে ভরণপোষণও দিতে বাধ্য।



মুসলিম বিবাহ ও তালাক (রেজিস্ট্রিকরণ) আইন ১৯৭৪ এর ৬ ধারা অনুসারে বিয়ের মতো তালাকও রেজিস্ট্রি করতে হয়। এখতিয়ারভূক্ত নিকাহ নিবন্ধক অর্থাৎ কাজী নির্ধারিত ফি নিয়ে তালাক রেজিস্ট্রি করবেন এবং ফি ব্যতিত রেজিস্ট্রির প্রত্যয়ন কপি প্রদান করবেন।



লেখাটি স্বত্ব সংরক্ষিত, অন্যত্র কপি/নকল বারিত।
তবে স্বত্ব উল্লেখপূর্বক হুবহু প্রিন্ট অথবা শেয়ার করতে বাধা নেই।

স্ত্রী কখন ডিভোর্স চাইতে পারে?


স্ত্রী কখন ডিভোর্স চাইতে পারে?
লেখক: এডভোকেট জয়নাল আবেদীন চৌধুরী (রিগ্যান)
01711 970 318 | advocateregan@gmail.com | www.advocateregan.com



প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে, স্ত্রী ডিভোর্স দিতে পারে কি?
প্রথম উত্তরটি হচ্ছে, "তালকের" (ডিভোর্স) ক্ষেত্রে স্বামী এবং স্ত্রী'র ক্ষমতা এক নয়। স্বামী যথন-তখন কোনরূপ কারণ ছাড়াই বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে, কিন্তু মুসলিম আইনে স্ত্রী'র ক্ষেত্রে এই ক্ষমতা সীমিত। তবে বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে স্বামীর একচ্ছত্র ক্ষমতা থাকেলেও স্বামীকে কিছু আইন মানতে হয় (
বিস্তারিত পড়ুন)।
দ্বিতীয় উত্তরটি হচ্ছে, স্ত্রী ও "তালাক" দিতে পারে, তবে নিম্মোক্ত পদ্ধতিতে, ক্ষমতাবলে এবং কারণে।


ক্ষমতাবলে তালাক (তালাক-ই-তৌফিজের মাধ্যমে)
আগেই বলা হয়েছে মুসলিম আইনে তালাকের বিষয়ে স্ত্রীর ক্ষমতা সীমিত। স্ত্রী'কে তালাক প্রদানের ক্ষমতা দেওয়া হলে তবেই একজন স্ত্রী তার স্বামীকে তালাক দিতে পারেন। স্ত্রীকে এরূপ ক্ষমতা অর্পনকে "তালাক-ই-তৌফিজ" বলে।
তালাক-ই-তৌফিজ স্ত্রীর একক ক্ষমতা নয়।
নিকাহমার ১৮ নং ঘরে "স্বামী স্ত্রীকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা অর্পণ করছে কি না? করে থাকলে কী শর্তে?" এই প্রশ্নটি থাকে। এখানে স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা দেয়, তবেই স্ত্রীও স্বামীর মতো তালাক দিতে পারে।

সেক্ষেত্রে স্ত্রীকেও স্বামীর মতো ১৯৭৪ সালের মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিষ্টেশন আইন ও ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবাবিক আইন অধ্যাদেশ অনুযায়ী এখতিয়াভূক্ত বা সংশ্লিষ্ট নিকাহ্ রেজিস্টার বা কাজীর মাধ্যমে তালাক দিতে হবে এবং তালাকের নোটিশ স্বামী'কে ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পৌরসভা চেয়ারম্যান/সিটি কর্পোরেশনের চেয়ারম্যানকে পাঠাতে হবে।



খুলার মাধ্যমে তালাক/বিচ্ছেদ
স্ত্রী আরেকটি উপায়ে স্বামীকে তালাক/বিচ্ছেদ দিতে পারে। এটি হচ্ছে খুলা, যা চুক্তিভিত্তিক বিচ্ছেদ হিসেবেও পরিচি। অর্থাৎ যখন কোন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা হচ্ছে না বা স্ত্রী স্বামীপ উপর বিরূপ মনোভাব পোষণ করেন তখন স্ত্রী চাইলে প্রতিাদনের (অর্থ বা সম্পত্তি) বিনিময়ে স্বামীকে বিচ্ছেদ ঘটাতে রাজী করাতে পারে। এই ধরনে বিচ্ছেদকে খুলা বলে। এক্ষেত্রেও স্ত্রী'কে চেয়ারম্যানের কাছে নোটিশ পাঠাতে হবে৷ খুলা তালাকের ক্ষেত্রে স্ত্রীদের দেনমোহরের বিনিময়ে স্বামীকে রাজী করানোর বিষয়টি বেশী প্রাধন্য পায়। স্ত্রীর এরূপ বিচ্ছেদের প্রস্তাবটি স্বামী কর্তৃক অগ্রাহ্য হলে স্ত্রী আদালাতের শরনাপন্ন হতে পারেন।


মোবারত এর মাধ্যমে তালাক/বিচ্ছেদ
মোবারাতও খুলার মত এক ধরণের চুক্তি ভিত্তিক বিবাহ বিচ্ছেদ। যখন স্বামী এবং স্ত্রী একে অন্যের প্রতি বিরূপ মনোভাব পোষণ করেন তখন তারা মোবারতের মাধ্যমে বিচ্ছেদ ঘটাতে পারেন। খুলা এবং মোবারত উভয়ই চুক্তিভিত্তিক বিচ্ছেদ হলেও উভয়ের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। খুলা হচ্ছে এককভাবে বিরূপ মনোভাবসম্পন্ন স্ত্রীর পক্ষ থেকে প্রতিদানে বিনিময়ে বিচ্ছেদ ঘটানো। আর মোবারত হচ্ছে, উভয়ে যখন উভয়ের প্রতি বিরূপ মনোভাব সম্পন্ন হয়, তখন উভয়ের সম্মতিতে বিচ্ছেদ। মোবারতের ক্ষেত্রেও চেয়ারম্যানের কাছে নোটিশ পাঠাতে হবে। এক্ষেত্রে যিনি বিচ্ছেদের প্রস্তাব দিবেন নোটিশ পাঠানোর দায়িত্ব তার।


আদালতের মাধ্যমে বিচ্ছেদ
উপরোক্ত পদ্ধতিগুলো ব্যতিত নিম্মোক্ত ৯টি ক্ষেত্রের যে কোন একটি বা একাধিক কারণে একজন স্ত্রী বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য আদালতের শরনাপন্ন হতে পারেন। ১৯৩৯ সালের বিবাহ বিচ্ছেদ আইনে স্ত্রীকে এরূপ ক্ষমতা বা অধিকার দেওয়া হয়েছে। কারণগুলো হচ্ছে,

(১) স্বামী ৪ বছরের অধিক সময় নিরুদ্দেশ থাকলে;
(২) দুই বছর যাবত স্ত্রীর খোরপোষ দিতে স্বামী ব্যর্থ হলে;
(৩) স্বামী ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইনের বিধান লঙঘন করে অতিরিক্ত স্ত্রী গ্রহণ করলে;
(৪) স্বামী সাত বছর বা তার বেশি সময় কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে;
(৫) কোনো যুক্তি-সঙ্গত কারণ ছাড়া তিন বছর ধরে স্বামী তাঁর দাম্পত্য দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে;
(৬) স্বামী বিয়ের সময় পুরুষত্বহীন থাকলে এবং তা মামলা দায়ের করার সময় পর্যন্ত বজায় থাকলে;
(৭) স্বামী দুই বছর ধরে পাগল থাকলে অথবা মারাত্বক যৌনব্যধিতে আক্রান্ত থাকলে;
(৮) নাবালিকা অবস্থায় বিয়ে হয়ে থাকলে অথবা সাবালকত্ব লাভের পর অর্থাৎ ১৮ বছর পূর্ণ হবার পর স্ত্রীর বিয়ে অস্বীকার করলে (কিন্তু এক্ষেত্রে স্বামীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপিত হয়ে থাকলে এরকম মামলা দায়ের করা যাবে না)
(৯) নিম্নলিখিত যে কোনো অর্থে স্ত্রীর সাথে স্বামী নিষ্ঠুর আচরণ করলে:
(ক) যদি স্ত্রীকে শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন করা;
(খ) কুখ্যাত মহিলাদের (women of ill reputation) সঙ্গে স্বামীর মেলামেশা করা কিংবা নৈতিকতা-বর্জিত জীবন যাপন করা।
(গ) নৈতিকতা-বর্জিত জীবন যাপনের জন্য স্ত্রীকে বাধ্য করা;
(ঘ) স্ত্রীর সম্পত্তি হস্তান্তর করা, কিংবা স্ত্রীকে তার সম্পত্তির আইনসম্মত অধিকার প্রয়োগে বাধা দেওয়া;
(ঙ) স্ত্রীকে তার ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালনে বাধা দেওয়া;
(চ ) যদি স্বামীর একাধিক স্ত্রী থাকে, তবে পবিত্র কোরানের নির্দেশে তাদের সাথে সমান ব্যবহার না করা;


লেখাটি স্বত্ব সংরক্ষিত, অন্যত্র কপি/নকল বারিত।
তবে স্বত্ব উল্লেখপূর্বক হুবহু প্রিন্ট অথবা শেয়ার করতে বাধা নেই।

জমি বন্টনের মামলা করবেন কিভাবে?

ছবি: ইন্টারনেট থেকে


লেখক: এডভোকেট জয়নাল আবেদীন চৌধুরী রিগ্যান

লেখাটি অনুমতি ব্যতিত অন্যত্র প্রকাশ বারিত


জমি/সম্পত্তি বন্টন কি?
ওয়ারিশ বা উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তির সীমানা চিহ্নিত করে যার যার প্রাপ্ত স্বত্ব বুঝে নেবার পক্রিয়াটি হচ্ছে "বন্টন"। স্থানীয় বা পারিবারিকভাবে বন্টনের আইনগত ভিত্তি দূর্বল। উত্তরাধিকার সম্পত্তি বন্টন করার জন্য আইনানুগ পদ্ধতি অবলম্বন করাটাই শ্রেয়। এ জন্য সকল শরিককে এখাতিয়ার সম্পন্ন দেওয়ানী আদালতে একটি মামলা করতে হয় যা বন্টন মোকাদ্দমা বা বাটোয়ারা মামলা বা পার্টিশন স্যুট নামে পরিচিত।


সম্পত্তির শরিক দুই প্রকার। (ক) উত্তরাধিকার সূত্রে শরিক  বা কো-শেয়ারার বাই ইনহেরিটেন্স (খ) খরিদ সূত্রে শরিক বা কো-শেয়ারার বাই পারচেজ।

বন্টনের মামলা করার সময় সকল শরিকগণ মামলায় পক্ষভুক্ত হতে হবে।  কোন একজন শরিক বাদ থাকলে বন্টননামা শুদ্ধ হবেনা।  যদি শরিকগণ আপোষ মতে বন্টন করতে রাজী না হন তাহলে যে কোন শরিক বন্টনের জন্য আদালতে উক্ত সম্পত্তির বন্টন চেয়ে মামলা করতে পারেন।


বন্টন মামলা করার জন্য কি কি প্রয়োজন?
প্রথমেই আপনাকে একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর সাথে পরামর্শ করে নিতে হবে। পাশাপাশি সম্পত্তির মালিকানা সংশ্লিষ্ট সকল কাগজ পত্র যেমন ভূমি জরিপ খতিয়ান, নামজারি খতিয়ান, মালিকানা দলিল, উত্তরাধিকার সনদ ইত্যাদি সংগ্রহে রাখতে হবে।

মামলা করার জন্য কোর্ট ফি দিতে হয় ১০০ টাকা কিন্তু ছাহাম চাইলে প্রতি ছাহামের জন্য অতিরিক্ত ১০০ ফি জমা দিতে হয়।


বন্টনের শর্ত সমূহ:
বন্টনের ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শর্ত জড়িত; যেমন-
-পরিমাপ করে শরীকদের ভূমির বা জমির সীমানা চিহ্নিতকরণ করতে হবে। এবং
-বন্টন তালিকায় প্রত্যেক সহ-মালিকের বরাদ্দকৃত সম্পত্তির উল্লেখ থাকতে হবে;
-তালিকায় মালিকানার বিভাজন সকল সহ-মালিক কর্তৃক স্বীকৃত হতে হবে;
-বন্টনের বিবরণ সুস্পষ্ট হতে হবে;
-প্রত্যেকটি তালিকা সহ-মালিকবৃন্দ কর্তৃক স্বাক্ষরিত হতে হবে;
-যথাযথভাবে স্ট্যাম্প শুল্ক দিয়ে দলিলটি রেজিস্ট্রি করতে হবে;
-সহ-শরীকগণ আপোষ বন্টন করে পরবর্তীতে তাদের কেউ তা না মানলে দেওয়ানী আদালতের মাধ্যমে তা কার্যকর করা যায় ৷


বন্টন দলিল কি?
১৮৯৯ সালেরস্ট্যাম্প এক্টের ২ (১৫) ধারায় বলা হয়েছে বণ্টন দলিল ও বণ্টক দলিল অর্থ একই ৷ যখন কোন সম্পত্তির সহ-শরিকগণ তাদের সম্পত্তি ব্যক্তিগত মালিকানায় পৃথকভাবে ভাগ করে নেয় বা নিতে সম্মত হয়ে কোন দলিল করে তাকেই বণ্টন দলিল বলে।


বন্টননামার রেজিষ্ট্রি ফি:

রেজিষ্ট্রেশন (সংশোধন) আইন ২০০৪ আইনের ১৭(১) ধারার বিধান অনুসারে বাটোয়ারা বা আপোস-বন্টননামা রেজিস্ট্রি করতে হবে, অর্থাৎ রেজিষ্ট্রি বাধ্যতামূলক।
সকল সহ-শরিকের মধ্যে জমি হিস্যানুযায়ী (স্ট্যাম্প এর উপর) বন্টন করে সাব-রেজিস্ট্রিঅফিসে দাখিল করে বন্টননামা দলিল রেজিষ্ট্রি করা যায় ৷ এ দলিল রেজিস্ট্রির জন্যস্ট্যাম্প খরচ লাগবে স্ট্যাম্প এর গায়ে জমির যে মূল্য লেখা হবে তার ২% হারে ৷ এছাড়া অন্যান্য ফিস কবলা দলিল রেজিস্ট্রিতে যেমন লাগে অনুরূপ লাগবে ৷ (তবে এই হার সরকার কর্তৃক সময় সময় পরিবর্তনযোগ্য)


বাটোয়ারামামলায় সাধারণত প্রত্যেক দাগের জমি সকল সহ-শরীক এর মধ্যে বণ্টিত হয়ে থাকে ৷ এমামলায় ২ বার ২টি ডিক্রী হয় ৷

প্রাথমিক ডিক্রী: এ ডিক্রীতে হিস্যানুযায়ী বন্টন আদেশ দেয়া হয় ৷

চূড়ান্তডিক্রী: এ ডিক্রীতে প্রয়োজনে আমিন কমিশন পাঠিয়ে সরে জমিনেসম্পত্তির দখল দেয়া হয় এবং সীমানা পীলার দ্বারা বিভাজন (জমির ভাগ) চিহ্নিত করারমাধ্যমে চূড়ান্ত ডিক্রী প্রচার করা হয় ৷ আদালত প্রয়োজনে আইন শৃংখলা বাহিনী নিয়োগকরে সম্পত্তির সীমানা চিহ্নিত করে ডিক্রী প্রাপককে সম্পত্তির দখল দেয়ার ব্যবস্থাকরে থাকেন ৷


বন্টন হওয়ার পর করণীয় কি?
আদালতের মাধ্যমে বন্টন হওয়ার পর এবং বন্টন দলিল রেজিষ্ট্রি পর অবশ্যই নিজ নামে নামজারি, জমাভাগ খতিয়ান করে নিতে হবে। পাশাপাশি খাজনা প্রদান করতে হবে। মনে রাখবেন, নামজারি হচ্ছে সরকারিভাবে সম্পত্তিকে নিজ নামে রেকর্ড করা। 

"রানার"-এবং হারিকেন....


আজ নিজ মনে কবি "সুকান্ত ভট্টাচার্য"কে কখনো শ্রদ্ধা কখনো ধিক্কার দিতে লাগলাম। লালমাটিয়া থেকে ২৫ টাকা রিক্সাযোগে মোহাম্মদপুর ডাকঘরে যখন পৌঁছলাম তখন ২টা বাজেনি। গালভর্তি পানরস নিয়ে এক ভীনগ্রহবাসী থুতু ছিটিয়ে ছিটিয়ে জানিয়ে দিল "টাইম শেষ, কাইল আহেন"।

.....এই হইল বাংলার ডাকঘর তথা পোষ্ট অফিসগুলার অবস্থা। হারিকেন দিয়ে খুঁজে খুঁজে বের করতে হয় টাইম-টেবিলের মধ্যে....না হইলে খালিহাতে ফিরতি ভাড়াও ২৫ টাকা গুণতে হবে....

.

তো...কবি "সুকান্ত ভট্টাচার্য" ডাকঘর ওয়লাদের এমন বে-রস দেখে কি তাঁর "রানার" কবিতাটি তুলে নিতেন?? আমি হলে তুলে নিতাম...

.

..... তবে, সুকান্ত বাবুর আত্মা একটা কর্ম করতে পারে; বেগম তারানা হালিমকে (মাননীয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী) ফোন করে আমার ক্ষোভের কথাটি জানিয়ে দিতে পারে।

নারী নির্যাতন


যশোরে পাঁচ পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

যশোরে পাঁচ পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

২১ অক্টোবর ২০১৫, ০৮:৪৬ | আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৫, ০৯:৩১
যশোর সদর উপজেলার ইছালী গ্রামের এনামুল কবিরকে হত্যার অভিযোগে পাঁচ পুলিশ সদস্যসহ ছয়জনকে আসামি করে আদালতে একটি মামলা করা হয়েছে। আসামিরা হলেন—ইছালী পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) তপনকুমার বিশ্বাস, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রাসেল, কনস্টেবল ইব্রাহিম, শহীদ, খাজুরা পুলিশ ক্যাম্পের এএসআই মাসুদ এবং পুলিশের কথিত সোর্স অরুণ। ইছালী গ্রামের নিহত এনামুলের স্ত্রী শিউলী বেগম গতকাল মঙ্গলবার মামলাটি করেন।
সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. আবু ইব্রাহিম মামলাটি গ্রহণ করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দিয়েছেন যশোর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ৮ অক্টোবর গভীর রাতে ইছালী ও খাজুরা ক্যাম্পের পুলিশ সদর উপজেলার ইছালী ও মথুরাপুর গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে অভিযান চালায়। তারা বাড়িগুলোর আসবাব ভাঙচুর এবং বাসিন্দাদের গালিগালাজ করে। ওই রাতে পুলিশ প্রথমে মথুরাপুর গ্রামের সাবেক মেম্বার ইদ্রিস আলীকে, পরে ইছালী পূর্বপাড়ার মাসুদকে আটক করে। রাত পৌনে ৩টার দিকে পুলিশ ইছালী গ্রামের এনামুলের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাঁকে আটক করে মাইক্রোবাসে খাজুরার দিকে নিয়ে যায়। ভোরে ভাই মাঈনুল কোতোয়ালি থানায় গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, পুলিশ এনামুলকে থানায় নেয়নি। এরপর পরিবারটির সদস্যরা তাঁকে বিভিন্ন ক্যাম্পে খুঁজতে থাকেন। সকালে ইছালী ক্যাম্পে মেয়ে ঈশিতা খোঁজ নিতে গেলে কর্তব্যরত পুলিশ তাকে তার বাবার লাশ খুঁজতে বলে দেয়। ১০ অক্টোবর যশোর জেনারেল হাসপাতালের স্টাফদের মাধ্যমে পরিবারের সদস্যরা সংবাদ পান, এনামুলের লাশ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজারের কাছে রেললাইন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। রেল পুলিশ (জিআরপি) লাশটি হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। খবর পেয়ে এনামুলের স্ত্রী, মেয়ে, ভাইসহ অন্যরা হাসপাতাল মর্গে এসে লাশ শনাক্ত করেন। 
সম্প্রতি ইছালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মোশাররফ হোসেন হত্যাকাণ্ডে তিনি জড়িত ছিলেন বলে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিকদার আক্কাছ আলী দাবি করেন।
নিহতের ভাই কলেজশিক্ষক মাঈনুল জানান, তাঁর ভাই একসময় সর্বহারা পার্টি করতেন। তবে তিনি বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে তাঁর কোনো যোগসূত্র ছিল না। মৃত্যুর আগে তিনি চাষাবাদ করে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছিলেন।

http://www.ntvbd.com/bangladesh/24906/যশোরে-পাঁচ-পুলিশের-বিরুদ্ধে-হত্যা-মামলা