২০০৪। সবে কিশোর থেকে যুবকের প্রথম প্রহর চলছে, ভাবটা রোমান্টিকতার অপূর্ব মিশ্রন এবং বৈচিত্র্যময়। সে'সময়ই নীলা'র দেখা!
পাশাপাশি বসে যাচ্ছিলাম। আমার গন্তব্য গাজীপুর, তার'টা জানা নেই।
বাক্য বিনিময়ে সাহসী ছিলাম না, কারণ, অাড় চোখে যতবার তার পাণে চেয়েছি ততবারই তার অগ্নি "নয়নে" দগ্ধ হয়ে লজ্জিত অথবা ভীতু হয়েছি। এভাবে আধঘন্টা, তারপর সে উধাও, এবং আমিও!
"আমার ঠিকানা আগারগাঁঁওয়ের পঙ্গু কারখানায়, নীলার'টা জানা নেই। সেদিন নীলা ছিলেন আমার পাশের সীটের সহযাত্রী।
ঐ দিনের পর প্রায় বছর পরে, এক গ্রীষ্মে ল্যাব এইডে চাদর মোড়া নীলাকে দেখে চমকে উঠি, সেই আড় চোখাচোখি, কিন্তু লজ্জিত বা ভীতু হবার কোন লক্ষণ আমার মাঝে সেদিন ছিল না। কারণ, তার "নয়ন যুগল" অগ্নি মূর্তি অবয়বে নয়, অনেকটাই যেন নিরুদ্দেশ-হতাশ।
অভয়ে কাছে গিয়ে জানতে চাইলাম, "আপনি সেদিন আমার সাথেই ছিলেন..মনে পড়ে???!!!
নীলা-অপলকে তাকালেন, অস্পষ্ট ধ্বনিতে উত্তর দিলেন "হ্যাঁ"।
এরপর জানতে যা চাইলাম-তার উত্তরে নীলা চাদরটি সরিয়ে দিলেন,
"এক পলক" দেখেছি শুধু, বাকী আর পারিনি।
"তার বা' হাতটি নেই"।
এদিনই প্রথম জানতে পারি তার নাম "নীলা"
এই নীলাকে নিয়ে আমার একটি লেখা "নীলা'র নয়ন" একটি দৈনিকে, একটি সাপ্তাহিকে প্রকাশিত হয়েছে এবং শ্রেষ্ঠ গল্পের পুরস্কারও জিতেছে।
গত কয়েকদিন যাবত নীলা'কে বেশ মনে পড়ছে, লঞ্চ ডুবি, রাস্তায় রাস্তায় এক্সিডেন্ট, গাড়ী পুড়ে যাওয়া, এসবের আবার সেলফি, লাইভ ভিডিও, ইত্যাদি, কত কি!!!???
কিন্তু নীলার সময় এসব ছিল না, তাই হয়তো নীলাকে নিয়ে এত দু:খবোধও কারোর ছিল না।
এই নীলাকে নিয়ে আমার একটি লেখা "নীলা'র নয়ন" একটি দৈনিকে, একটি সাপ্তাহিকে প্রকাশিত হয়েছে এবং শ্রেষ্ঠ গল্পের পুরস্কারও জিতেছে।
গত কয়েকদিন যাবত নীলা'কে বেশ মনে পড়ছে, লঞ্চ ডুবি, রাস্তায় রাস্তায় এক্সিডেন্ট, গাড়ী পুড়ে যাওয়া, এসবের আবার সেলফি, লাইভ ভিডিও, ইত্যাদি, কত কি!!!???
কিন্তু নীলার সময় এসব ছিল না, তাই হয়তো নীলাকে নিয়ে এত দু:খবোধও কারোর ছিল না।
আজ যা ঘটছে-প্রযুক্তির বদেৌলতে তা জানতে পারছে সকলে।
কিন্তু নীলার জীবনেও এমন কিছু ঘটে গেল জানতে পারেনি কেউ।
তবে শেষটা হচ্ছে, "সেদিন যা হয়েছে আর এখন যা হচ্ছে, এসব সত্যিকারে কাম্য নয়"
কেন বারবার এসব হচ্ছে এবং হবে?
কেন বারবার এসব হচ্ছে এবং হবে?
লঞ্চে কেন অতিরিক্ত যাত্রী উঠবে? ফিটনেসহীন গাড়ী কেন রাস্তায় থাকবে? কেন প্রশিক্ষণ ছাড়া চালক গাড়ী চালাবে? আর কত নীলা, আর কত সেলফি?
আসলেও তিন বোনের এ যাত্রা ছিল অন্যরকম! উদ্দেশ্যটাই যেন তিন বোনের হারিয়ে যাওয়া। কে জানতো প্রমত্তা পদ্মায় মরণেও তিন বোন একই সঙ্গে যাত্রা করবে! তখনও তারা জানতেন না তাদের আর ফেরা হবে না ঢাকায়, ফেরা হবে না প্রিয় ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে, পাওয়া হবে না প্রিয় বন্ধুদের সান্নিধ্য। ২৬শে আগস্ট জন্মদিন ছিল নূসরাত জাহান হীরার। জয়নুল হক শিকদার উইমেন্স মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের তার সহপাঠীদের কথা দিয়েছিলেন, ঈদের ছুটি কাটিয়ে যথাসময়ে ফিরে আসবেন তাদের মাঝে। বড় হওয়ার পরে সচরাচর জন্মদিন পালন হয়নি তার।
0 comments:
Post a Comment