Hot!

বিবাহিত অবস্থায় অথবা বিচ্ছেদের পর ভরণপোষণ


    বিবাহিত অবস্থায় ভরণপোষণ
    বিবাহিত কিন্তু পৃথক থাকা অবস্থায় ভরণপোষণ
    বিয়ে-বিচ্ছেদের পর ভরণপোষণ


সাবিনা : বিবাহিত অবস্থায় ভরণপোষণ কি ধরণের ?
উকিল : বিয়ের সম্পর্ক থাকা অবস্থায় স্ত্রী স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণ পাবেন। তবে এর কোন নির্দিষ্ট পরিমাণ নির্ধারণ করা হয় নি। স্বামীর আর্থিক অবস্থা অনুযায়ী ভরণপোষণ দেবার ক্ষমতা নির্ভর করে। ব্যাখ্যা: ১
সাবিনার বোন : বিবাহিত কিন্তু পৃথক থাকা অবস্থায় ভরণপোষণ কি ?
উকিল : স্ত্রী যদি যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া স্বামীর কাছ থেকে আলাদা বসবাস করেন, তবে স্বামী স্ত্রীকে ভরণপোষণ দিতে বাধ্য থাকবেন না। তবে, বিবাহিত থাকা অবস্থায় স্ত্রী স্বামীর কাছ থেকে আলাদা বসবাস করেও কয়েকটি ক্ষেত্রে ভরণপোষণ পেতে পারেন।
সাবিনা : সে কয়েকটি ক্ষেত্র কি কি ?
উকিল : প্রথমতঃ স্বামী যদি স্ত্রীর তাৎক্ষণিক দেনমোহরের দাবি অস্বীকার করেন বা পরিশোধ না করেন, তাহলে স্ত্রী স্বামীর কাছ থেকে আলাদা বসবাস করলেও ভরণপোষণ পাবেন।
দ্বিতীয়তঃ স্বামী বর্বর বা নিষ্ঠুর আচরণ করলে স্ত্রী আলাদা বসবাস করেও ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী হবেন।
তৃতীয়তঃ স্বামী আরেকটি বিয়ে করলে বা রক্ষিতা রাখলে স্ত্রী স্বামীর সাথে থাকতে অস্বীকৃতি জানাতে পারেন এবং তারপরও স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণ দাবি করার অধিকার রাখেন।
সাবিনার বোন : বিয়ে-বিচ্ছেদের পর ভরণপোষণ কিভাবে পায় ?
উকিল : বিয়ে-বিচ্ছেদের পরও স্ত্রী কিছুদিন ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী হয়। যেদিন থেকে বিচ্ছেদ কার্যকরী হয় সেদিন থেকে ৯০ দিন (এ সময়কে ইদ্দত বলা হয়) পর্যন্ত স্ত্রী ভরণপোষণ পাবার অধিকারী হয়। ব্যাখ্যা: ২
সাবিনা : আচ্ছা, সন্তানের ভরণপোষণের ক্ষেত্রে তো মা-বাবার দায়িত্ব আছে, তাই না ?
উকিল : হ্যাঁ, মুসলিম আইন অনুযায়ী সন্তানের স্বাভাবিক অভিভাবক বাবা এবং মা মূলতঃ সন্তান লালন পালন করেন। এক্ষেত্রে মাতা-পিতার আলাদা দায়িত্ব আছে।
সাবিনা : ভরণপোষণের ক্ষেত্রে পিতার দায়িত্ব কি ?
উকিল : একজন মুসলমান পুরুষ সাবালক হওয়া পর্যন্ত ছেলেকে এবং বিয়ের আগ পর্যন্ত মেয়েকে ভরণপোষণ দিতে বাধ্য।
সাবিনা : বিয়ের পর মেয়ে যদি তালাকপ্রাপ্ত হয় ?
উকিল : বিধবা ও তালাক প্রাপ্তা মেয়ে যদি সামর্থবান না হন সেক্ষেত্রে পিতা তাদেরকে ভরণপোষণ দিতে বাধ্য, তবে বিধবা পুত্রবধুকে ভরণপোষণ দিতে তিনি বাধ্য নন। 
সাবিনার বোন : সাবালকত্ব অর্জনের পরও যদি সন্তানরা নিজ ভরণপোষণ যোগাতে সমর্থ না হয় তবে ?
উকিল : আইন বাবার কাছে ভরণপোষণ দাবি করাকে অনুমতি দেয়। তবে এক্ষেত্রে পিতা সাবালক সন্তানদের ভরণপোষণ দিতে বাধ্য নন।
সাবিনা : অসুস্থ ও অক্ষম সন্তানদের ভরণপোষণের দায়িত্বও কি বাবার ?
উকিল : হ্যাঁ, অসুস্থ ও অক্ষম সন্তানদের ভরণপোষণের দায়িত্ব বাবার।
সাবিনার বোন : মা যখন সন্তানের জিম্মাদার তখনও বাবা ভরণপোষণ দিবেন ?
উকিল : মা-বাবার বিচ্ছেদের পরেও মা ছেলেকে ৭ বছর বয়স পর্যন্ত ও মেয়েকে বয়োঃসন্ধি পর্যন্ত নিজের কাছে রেখে রক্ষণাবেক্ষণ করার অধিকারী। এই সময়ে সন্তানেরা বাবার কাছ থেকে আলাদা হয়ে মায়ের সঙ্গে বসবাস করলেও বাবা সন্তানের ভরণপোষণ দানে আইনত বাধ্য। ব্যাখ্যা: ৩
সাবিনা : ভরণপোষণের ক্ষেত্রে মায়ের দায়িত্ব কি ?
উকিল : শুধুমাত্র বাবা সব সময় সন্তানের ভরণপোষণ দিতে বাধ্য নন। যদি কোন মা, বাবার চেয়ে স্বচ্ছল হন তাহলে মাও বাবার মতো সন্তানের ভরণপোষণ দিতে বাধ্য। স্ত্রীর সামাজিক অবস্থা, প্রয়োজন, স্বামীর আর্থিক অবস্থা ইত্যাদি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করেই সাধারণত ভরণপোষণ নির্ধারিত হয়ে থাকে।
সাবিনা : মা-বাবার ভরণপোষণের ক্ষেত্রেও তো সন্তানের দায়িত্ব আছে, তাই না ?
উকিল : হ্যাঁ, দরিদ্র ও অক্ষম বাবা-মাকে ভরণপোষণ দেয়া সন্তানের নৈতিক দায়িত্ব। আদালত বাবা-মার ভরণপোষণের পরিমাণ নির্ধারণ করে দিতে পারে এবং সন্তানদের তা দিতে আদেশ প্রদান করতে পারে।
সাবিনার বোন : স্বচ্ছল সন্তানেরাও কি গরিব মা-বাবাকে ভরণপোষণ দিবে ?
উকিল : মা যদি স্বচ্ছলও হন তবু গরিব ছেলে তাকে দেখতে বাধ্য। উপার্জনক্ষম ছেলেমাত্র গরিব মা-বাবাকে দেখবে বা লালন- পালন করবে।
উকিল : এছাড়া আত্মীয়ের ভরণপোষণের ক্ষেত্রেও কিছু দায়িত্ব আছে। দরিদ্র আত্মীয়রাও ভরণপোষণ পাবার অধিকারী। উত্তরাধিকারে তাদের প্রাপ্য অংশের অনুপাতে তাদের ভরণপোষণ দেয়া যায়। উল্লেখ্য, দাদা-দাদীও নাতির কাছে ভরণপোষণ পেতে পারেন। দাদা-দাদী গরিব না হলে নাতিকে তাদের ভরণপোষণ দিতে হবে না।
সাবিনা : আচ্ছা, মুসলিম আইনেই কি শুধু ভরণপোষণের অধিকার আছে ? হিন্দু আইনে কি কিছু নেই ?
উকিল : হিন্দু আইনেও কোন ব্যক্তির ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকার রয়েছে, যেমন :


একজন হিন্দুর কোন সম্পত্তি না থাকলেও সে তার নাবালক ছেলে, অবিবাহিতা মেয়ে ও বাবা-মার ভরণপোষণ করতে আইনতঃ বাধ্য। দায়ভাগা মতে, বাবা সাবালক ছেলেকে ভরণপোষণ করতে আইনতঃ বাধ্য নন।
কর্তা যৌথ পরিবারের সকল পুরুষ, তাদের স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের ভরণপোষণে আইনতঃ বাধ্য।
একজন মৃত ব্যক্তি যাদের ভরণপোষণ করতে আইনতঃ বাধ্য ছিল, মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকারীও মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি হতে তাদের ভরণপোষণ করতে আইনতঃ বাধ্য।
বিবাহ না হওয়া পর্যন্ত বাবা তার কন্যা সন্তানের ভরণপোষণ করতে বাধ্য। বাবার অবর্তমানে কন্যার ভরণপোষণ বাবার সম্পত্তি হতেই চলতে থাকবে।
অক্ষমতা বা অযোগ্যতাহেতু কেউ পৈতৃক সম্পত্তির অধিকারে বঞ্চিত থাকলে তাকে ও তার পরিবারবর্গকে অক্ষম ব্যক্তির বাবা ও বাবার অবর্তমানে বাবার উত্তরাধিকারী যথাযোগ্য ভরণপোষণ দিতে বাধ্য। এছাড়া স্ত্রীর ভরণপোষণের ক্ষেত্রে হিন্দু ধর্মে কিছু আইন আছে। ব্যাখ্যা:৪


সাবিনার বোন : খ্রিষ্টান ধর্মে কি ভরণপোষণের অধিকার নেই ?
উকিল : হ্যাঁ, আছে। ডিভোর্স এ্যাক্টের ৩৭ ধারা অনুযায়ী, স্ত্রী তার স্বামীর কাছ থেকে বিচ্ছেদের পর থেকে স্থায়ীভাবে ভরণপোষণ পেতে পারে। এছাড়া খ্রিষ্টান ধর্মে সন্তানের ভরণপোষণ সম্পর্কেও বলা হয়েছে। 
সাবিনা : খ্রিস্টান আইনে স্ত্রীর ভরণপোষণ কি রকম হয় ?
উকিল : খ্রিস্টান পারিবারিক আইন অনুযায়ী স্ত্রী-সন্তানদের ভরণপোষণের দায়িত্ব স্বামী বা পিতার। বিয়ে বর্তমান থাকাকালীন অবস্থায় স্বামী-স্ত্রীর ভরণপোষণ দিবেন।
সাবিনার বোন : বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটলেও কি আদালতের আদেশে স্বামী-প্রাক্তন স্ত্রীকে ভরণপোষণ দিবেন ?
উকিল : হ্যাঁ, বিয়ে বিচ্ছেদের কারণে কখনোই স্বামী ভরণপোষণ দেয়া থেকে বিরত থাকতে পারবেন না।
সাবিনা : সন্তানের ভরণপোষণের ক্ষেত্রে মা-বাবার দায়িত্ব কি ?
উকিল : মা-বাবার সম্পর্ক ভেঙ্গে যাবার পর সন্তানের ভরণপোষণের প্রশ্নটি আদালতের এখতিয়ারধীন। সন্তানের কল্যাণের কথা চিন্তা করে  মা-বাবার আর্থিক সামর্থ্যের বিবেচনায় আদালত নির্দেশ দিবেন যে, মা-বাবা কে কি পরিমাণ ভরণপোষণ সন্তানদের দিবেন।
সাবিনা : ভরণপোষণের অধিকার পেতে কোন ধারায় মামলা করতে হবে ?
উকিল : ভরণপোষণের অধিকার পেতে ফৌজদারী কার্যবিধি, পারিবারিক আদালত, মুসলিম পারিবারিক আইন এ মামলা করতে পারেন। ব্যাখ্যা: ৫
সাবিনার বোন : সন্তানের ভরণপোষণ আদায়ের মামলা কোথায় করা যাবে ?
উকিল : সন্তানের ভরণপোষণ আদায়ের মামলা ম্যাজিষ্ট্রেট কোর্ট বা পারিবারিক আদালতে করা যাবে। ব্যাখ্যা: ৬
সাবিনার বোন : বিবাহিত মুসলিম নারী কখন স্বামীর কাছ থেকে আইনতঃ ভরণপোষণ পায় না –
উকিল : তালাক কার্যকর হওয়ার পর অথবা স্বামীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন যুক্তি সঙ্গত কারণ ছাড়া আলাদাভাবে বসবাস করলে স্ত্রী ভরণপোষণ পাবে না।
সাবিনার বোন : তাহলে হিন্দু আইনে কি আছে ?
উকিল :  স্ত্রী যদি অন্য ধর্মে ধর্মান্তরিত হয় অথবা স্ত্রী যদি আইনসঙ্গত কারণ ছাড়াই স্বামীর সাথে স্ত্রীরূপে বসবাসে অনিচ্ছুক হয়। তাহলে সে ভরণপোষণ পায় না।
সাবিনার বোন : খ্রিস্টান আইনেও কি এমন কিছু আছে ?
উকিল : হ্যাঁ আছে, খ্রিস্টান আইনে কখনোই স্ত্রী স্বামীর পক্ষ থেকে ভরণপেষণ লাভে বঞ্চিত হয় না।

সাবিনা উকিলের কাছ থেকে ভরণপোষণের বিষয়ে জানতে পেরে অনেক আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছে। সে উকিলের সহায়তায় আদালতের শরনাপন্ন হয় এবং আদালতের রায়ের মাধ্যমে বর্তমানে স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণ পাচ্ছে।

সচরাচর জিজ্ঞাসা
প্রশ্ন ১ : ভরণপোষণের অধিকার বলতে কি বুঝায় ?
উত্তর : ভরণপোষণ হলো জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ইত্যাদি মৌলিক চাহিদা পূরণ। মুসলিম আইনে নির্ভরশীল ও আর্থিকভাবে অসমর্থ ব্যক্তিরা সাধারণত ভরণপোষণ পায়।
প্রশ্ন-২. কে কে ভরণপোষণ পাওয়ার যোগ্য?
উত্তর. সকল ধর্মমতে স্ত্রী, সন্তান-সন্ততি, বাবা-মা ও দরিদ্র্য আত্মীয়রা ভরণপোষণ পাবার অধিকারী।
প্রশ্ন-৩. ভরণপোষণ থেকে বঞ্চিত হলে কোথায় প্রতিকার পাওয়া যায়?
উত্তর. পারিবারিক আদালত, ফৌজদারি আদালত ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করলে আইন অনুযায়ী প্রতিকার পাওয়া যাবে।
প্রশ্ন-৪. বিয়ে বিচ্ছেদের পর স্ত্রী কি ভরণপোষণ পাবেন?


উত্তর.
মুসলিম নারীরা বিয়ে বিচ্ছেদের কার্যকর হওয়ার পর ভরণপোষণ পাবেন না।
হিন্দু আইনে বিয়ে বিচ্ছেদ নেই কিন্তু যুক্তিসঙ্গত কারণে স্ত্রী পৃথক বসবাস করলে আইন অনুযায়ী স্ত্রী ভরণপোষণ পাবেন।
খ্রিস্টান নারীরা সকল সময়েই ভরণপোষণ পাবেন।










তথ্যসূত্র
পারিবারিক আইনে বাংলাদেশের নারী, আইন ও সালিশ কেন্দ্র, পৃষ্ঠা: ৪৫, ৪৭, ৭৬, ১০১, প্রথম প্রকাশ: জুন-১৯৯৭।
নারী ও আইন, মুসলিম নারীর খরপোষের অধিকার, এ্যাডভোকেট লুৎফে আরা বেগম, পৃষ্ঠা-১৯, চতুর্থ সংস্করণ: ডিসেম্বর ১৯৯৩।



ভরণপোষণের অধিকার : ব্যাখ্যা




ব্যাখ্যা: ১
১৮৯৮ সালের ফৌজদারী কার্যবিধির ৪৮৮ ধারায় বলা আছে, স্ত্রীকে মাসিক ৪০০ টাকার সমপরিমাণ ভরণপোষণ দিতে স্বামী বাধ্য থাকবেন। অবশ্য ৪০০ টাকার পরিমাণ যে সময়ে নির্দিষ্ট করা হয়েছে, তার সাথে বর্তমান অবস্থার তফাত রয়েছে।



ব্যাখ্যা: ২

১৯৮৫ সালের পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ অনুযায়ী স্ত্রী ভরণপোষণের দাবি করে পারিবারিক আদালতে মামলা করতে পারেন। এটি একটি দেওয়ানী প্রতিকার। যে জায়গায় স্ত্রী বসবাস করছেন সে জায়গায় পারিবারিক আদালতে মামলা দায়ের করা যাবে। উল্লেখ্য যে, পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ অনুযায়ী ভরণপোষণ, বিবাহ বিচ্ছেদ, দেনমোহর, সন্তানের অভিভাবকত্ব ইত্যাদি ব্যাপারে পারিবারিক আদালতে মামলা দায়ের করতে বলা হয়েছে। তবে এই অধ্যাদেশ ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৮৮ ধারাকে খর্ব করেনি বলে দুই ধরণের আদালতেই মামলা করা যায়।



ব্যাখ্যা: ৩

গার্ডিয়ান এন্ড ওয়ার্ডস এ্যাক্ট অনুযায়ী যদি কোন মা আদালতের রায় অনুযায়ী তার সন্তানদের অভিভাবকত্ব পেয়ে যান তাহলে সন্তানেরা ২১ বছর পর্যন্ত মায়ের হেফাজতে থাকলেও বাবা সন্তানদের ভরণপোষণ দিতে বাধ্য।



ব্যাখ্যা: ৪
১৯৪৬ সালের বিবাহিতা হিন্দু নারীর পৃথক বাসস্থান ও ভরণপোষণ আইনানুযায়ী, নিম্নোক্ত কারণসমূহের উদ্ভব হলে, একজন বিবাহিতা নারী স্বামীর কাছ হতে পৃথকভাবে থেকেও স্বামীর নিকট হতে ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারীঃ
স্বামী যদি এমনকোন দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত থাকে যা সে স্ত্রীর কাছ থেকে পায় নি;
স্বামী যদি স্ত্রীর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করে এবং নিষ্ঠুরতা যদি এমন পর্যায়ের হয় যে স্বামীগৃহে তার জীবনাশংকার ভয় থাকে
স্বামী যদি স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই তাকে পরিত্যাগ করে
স্বামী যদি স্ত্রীর বর্তমানে পুনরায় বিয়ে করে।
স্বামী যদি ধর্মান্তরিত হয়
স্বামী যদি ঘরেই কোন উপপত্নী রাখে অথবা অভ্যাসগত ভাবে উপপত্নীর সাথে বসবাস করে।


অন্যান্য যৌক্তিক কারণ।


ব্যাখ্যা: ৫
স্ত্রীর ভরণপোষণ আদায় সংক্রান্ত মামলা
ভরণপোষণের দাবিতে ফৌজদারী কার্যবিধির ৪৮৮ ধারা অনুযায়ী স্ত্রী মামালা করতে পারেন।
১৯৮৫ সালের পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ অনুযায়ী ভরণপোষণের জন্য স্ত্রী মামলা দায়ের করতে পারেন।
১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ অনুযায়ী স্বামী-স্ত্রীকে ভরণপোষণ না দিলে স্ত্রী স্থানীয় চেয়ারম্যানের নিকট ভরণপোষণের জন্য আবেদন করবেন। চেয়ারম্যান সালিশী পরিষদ গঠন করে সার্টিফিকেট ইস্যু করবেন। এরপরও স্বামী ভরণপোষণ না দিলে স্ত্রী বকেয়া ভূমি রাজস্ব আকারে তা আদায় করতে পারবেন।



ব্যাখ্যা: ৬
প্রথমতঃ অবহেলিত সন্তানেরা ফৌজদারি দন্ডবিধির ৪৮৮ ধারার অধীনে ম্যাজিষ্ট্রেট কোর্টে পিতাকে ভরণপোষণ দানের নির্দেশ দেয়ার জন্য মামলা দায়ের করতে পারে।
এছাড়া পারিবারিক আদালতেও মামলা দায়ের করে ভরণপোষণ আদায়ের ব্যবস্থা আছে। উল্লেখ্য যে, ফৌজদারি আইনের ৪৮৮ নং ধারায় হিন্দু ও খ্রিস্টান স্ত্রী এবং সন্তানেরাও ভরণপোষণ বা খোরপোষের দাবিতে আদালতে মামলা দায়ের করতে পারেন।


- See more at: http://www.infokosh.gov.bd/atricle/%E0%A6%AD%E0%A6%B0%E0%A6%A3%E0%A6%AA%E0%A7%8B%E0%A6%B7%E0%A6%A3%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%85%E0%A6%A7%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0#sthash.WH7oJPPT.dpuf



0 comments:

Post a Comment