দেওয়ানি মামলা কোনটি কোথায় করবেন?

সাইদুল ইসলাম

সম্পত্তির ওপর স্বত্ব ও দখলের অধিকার নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপিত হলে যে মামলার মাধ্যমে তা নিষ্পত্তি করা হয় তাকে দেওয়ানি মামলা বলে। দেওয়ানি মামলাকেই আদালতের ভাষায় 'মোকদ্দমা' বলে। সব ধরনের দৃশ্যমান স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি এবং অদৃশ্য সব ধরনের অধিকারসংক্রান্ত মোকদ্দমা হচ্ছে দেওয়ানি আদালতের বিচার্য বিষয়। যেমন_ যে কোনো ধরনের সম্পত্তি বা স্বত্ব নিয়ে মামলা, দ্বিতীয়ত, কোনো মানবিক সম্পর্ক (পিতা-পুত্র, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক) নিয়ে বিরোধ, মসজিদের নামাজ পড়া বা মন্দিরে পূজা করার অধিকার আদায়, ভোটাধিকার ইত্যাদি বিষয়ে দেওয়ানি আদালতে মামলা দায়ের করা যায়। সুতরাং সাধারণভাবে বলা যায়, সব ধরনের স্বত্ব, অধিকার, দাবি প্রভৃতির মামলা দেওয়ানি আদালতের আওতাভুক্ত। সুপ্রিম কোর্ট (আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগ) ছাড়াও আমাদের দেশে পাঁচ ধরনের দেওয়ানি আদালত আছে। প্রথমত 'জেলা জজ আদালত'। হাইকোর্ট বিভাগের পরেই এ আদালতের স্থান। জেলার সর্বোচ্চ আদালতই জেলা জজ আদালত। এ আদালত যখন দেওয়ানি প্রকৃতির মামলার বিচার করেন তখন তাকে 'দেওয়ানি আদালত' বলা হয়। আবার যখন 'ফৌজদারি মামলার বিচার করেন তাকে 'ফৌজদারি আদালত' বলা হয়। ১ লাখ থেকে ৫ লাখ পর্যন্ত মূল্যমানের মামলার আপিল জেলা জজ আদালতে করতে হয়। সাকসেশন সার্টিফিকেট, লেটার অব অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ইত্যাদি জেলা জজ ইস্যু করতে পারেন। জেলা জজ আদালত তার নিম্ন আদালতের মোকদ্দমা স্থানান্তর সম্পর্কিত দরখাস্ত, রিভিশন শুনানি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি করতে পারেন। পারিবারিক আদালতের রায় ও আদেশের বিরুদ্ধে জেলা জজ আপিল গ্রহণ ও নিষ্পত্তি করে থাকেন। দ্বিতীয়ত 'অতিরিক্ত জেলা জজ আদালত'। অতিরিক্ত জেলা জজের বিচারিক ক্ষমতা জেলা জজের সমান। তবে কোনো মোকদ্দমা বা আপিল এ আদালতে সরাসরি দায়ের করা যায় না। জেলা জজ আদালতে দাখিল করা দরখাস্ত নিষ্পত্তির জন্য এ আদালতে প্রেরণ করা হলে তা শুনানি শেষে নিষ্পত্তি করা হয়। অতিরিক্ত জেলা জজের কোনো প্রশাসনিক ক্ষমত?া নেই। তৃতীয়ত 'যুগ্ম জেলা জজ আদালত'। প্রত্যেক জেলায় এক বা একাধিক যুগ্ম জেলা জজ থাকেন। তিনি দেওয়ানি মোকদ্দমার সর্বোচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিচারক। এ ?আদালত ৪ লাখ ১ টাকা থেকে ?অসীম মূল্যমানের বিষয়বস্তুর মূল মোকদ্দমা গ্রহণ ও বিচার নিষ্পত্তি করতে পারেন। চতুর্থত 'সিনিয়র সহকারী জজ আদালত'। প্রত্যেক জেলায় সাধারণত এক বা একাধিক সিনিয়র সহকারী জজ আদালত। সম্পত্তি, অফিস, ব্যক্তিগত অপকার, ক্ষতিপূরণ ও ধর্মীয় অধিকার-সংক্রান্ত যাবতীয় মোকদ্দমা সিনিয়র সহকারী জজ ও সহকারী জজ আদালতে দায়ের করা হয়। এ আদালত ২ লাখ ১ টাকা থেকে ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত মূল্যমানের মূল মোকদ্দমা গ্রহণ ও নিষ্পত্তি করতে পারেন। পঞ্চমত 'সহকারী জজ আদালত'। এ আদালত সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা পর্যন্ত মূল্যমানের বিষয়বস্তুর মূল মামলা বিচারের জন্য গ্রহণ ও নিষ্পত্তি করতে পারেন। এ আদালতের কোনো আপিল এখতিয়?ার নেই। সিনিয়র সহকারী জজ ও সহকারী জজ আদালতে স্বত্ব ঘোষণা, স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা, চুক্তি কার্যকর, দলিল, চুক্তিপত্র, লিখিত অঙ্গীকারপত্র ইত্যাদি রদ ও রহিত, যে কোনো কর্তৃপক্ষের অবৈধ আদেশ রদ ও রহিত, দখল পাওয়া, সম্পত্তি বা অফিস-সংক্রান্ত কোনো অধিকার সম্পর্কে ঘোষণা পাওয়া, টাকা আদায়, সম্পত্তি অগ্রক্রয়, নির্বাচন-সংক্রান্ত মোকদ্দমা দায়ের করা যায়। - See more at: http://www.jjdin.com/?view=details&archiev=yes&arch_date=06-8-2013&feature=yes&type=single&pub_no=563&cat_id=2&menu_id=76&news_type_id=1&news_id=79422#sthash.SrC5WL5z.dpuf